লকডাউনে মানসিক সমস্যা কাটিয়ে উঠতে করনীয়

করোনাভাইরাস সংক্রমণের কারণে পুরো বিশ্ব অর্থনীতি স্থবির হয়ে পড়েছে। দীর্ঘদিন ধরে ঘরে থাকার কারণে মানুষের মনে হতাশা দীর্ঘস্থায়ী হয়ে আসছে। এর মধ্যে অনেক ধরণের অপ্রত্যাশিত ঘটনা ঘটছে।

বিশেষজ্ঞরা বলছেন দীর্ঘায়িত বিচ্ছিন্নতা একজন ব্যক্তির মানসিক স্বাস্থ্যের উপর ক্ষতিকারক প্রভাব ফেলতে পারে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞদের মতে, সামাজিক যোগাযোগ এড়িয়ে অনেকে মহামারীর মধ্যে নিজেকে গৃহবন্দী করে রাখছেন। যাইহোক, যারা নিয়মিত কাজে যুক্ত হন বা ঘন ঘন ভ্রমণ করেন তাদের জন্য লকডাউনটি একটি খুব কঠিন সময়। বিশেষত শিশু এবং প্রাপ্তবয়স্কদের এক জায়গায় থাকার জন্য মানসিক অসুস্থ হওয়ার ঝুঁকি বেড়ে যাচ্ছে।

বিশেষজ্ঞরা এই সময়ে মানসিক স্বাস্থ্যকে ভাল রাখতে কিছু পরামর্শ দিয়েছেন উদাহরণস্বরূপ-

১. নিজেকে দিনভর সচল রাখুন।

২. সুষম খাদ্য খান এবং প্রচুর পরিমাণে পানি পান করুন।

৩. নেতিবাচক চিন্তাভাবনা থেকে মুক্তি পেতে বই পড়ুন, ছবি আঁকুন। সম্ভব হলে ঘরে ফুলের গাছ লাগান। বিনোদনমূলক কিছু দেখার চেষ্টা করুন।

৪. বয়স্ক ব্যক্তিরা মৃত্যুর ভয়ে ভুগতে পারেন। তাদের সাথে আরও কিছুটা সময় ব্যয় করুন।

৫. নিজেকে অপ্রয়োজনীয় চিন্তাভাবনা থেকে দূরে রাখুন।

৬. যদি আপনি উদ্বিগ্ন বোধ করেন তবে কয়েক মিনিটের জন্য চুপচাপ বসে থাকুন এবং গভীর শ্বাস-প্রশ্বাস অভ্যন্তরে এবং বাইরে অনুশীলন করুন।

৭. বাচ্চাদের এমন ব্যস্ত রাখুন যাতে তারা হতাশায় এবং নিঃসঙ্গতায় না ভোগে।

৮. যদি আপনি রাগান্বিত ও বিরক্ত বোধ করেন তবে পেছন থেকে সংখ্যা গণনা করে আপনার মনকে শান্ত করুন, অর্থাত ১০ থেকে ১ পর্যন্ত।

৯. খারাপ লাগলে আপনার পরিবারের সাথে সময় কাটাবেন এবং বন্ধুদের সাথে ফোনে যোগাযোগ করতে পারেন।

এ সময় অনেকেই সর্দি-কাশি সহ ভাইরাল জ্বরে ভুগছেন। বিশেষজ্ঞরা করোনার ঝুঁকিযুক্ত লোকদের শুরু থেকেই আইসোলেশনে /বিচ্ছিন্ন থাকার পরামর্শ দিচ্ছেন। এটি অনেকের জন্য মানসিক সমস্যাও সৃষ্টি করছে। বিশেষজ্ঞরা তাদের মানসিক স্বাস্থ্য ভাল রাখার জন্য কিছু পরামর্শ দিয়েছেন। উদাহরণস্বরূপ-

১. অকারণে আতঙ্কিত হবেন না।

২. বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা প্রদত্ত স্বাস্থ্যবিধি নিয়ম অনুসরণ করুন।

৩. কে অসুস্থ হয়েছে? কত লোক অসুস্থ হয়েছে এবং কীভাবে তা জানা বন্ধ করুন।

৪. চাঞ্চল্যকর খবর বা সোশ্যাল মিডিয়া পোস্ট থেকে দূরে থাকুন।

৫. তামাক, অ্যালকোহল এবং অন্যান্য ড্রাগগুলি গ্রহণ থেকে বিরত থাকুন। এগুলি মানসিক স্বাস্থ্যকে আরও খারাপ করতে পারে।

৬. সকাল ও সন্ধ্যায় কিছু শারীরিক যোগ ব্যায়াম এবং ধ্যান করুন।

৭. আপনি যদি করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হন তবে আতঙ্কিত হবেন না। ভাল কাজগুলো করতে থাকুন। মনে রাখবেন যে বেশিরভাগ মানুষ এই রোগ থেকে সেরে উঠছেন।

৮. চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ওষুধ সেবন করুন। পাশাপাশি পুষ্টিকর খাবার, ফলমূল খাওয়া। পর্যাপ্ত জল পান করুন।

৯. সকল মহামারী থেকে বাঁচতে মহান আল্লাহর কাছে বেশি বেশি দুয়া করুন। পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ুন।

সবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন আল্লাহ হাফেজ।

Add a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *