রসূলুল্লাহ স.-এর তাহাজ্জুদ নামাযের রাকাত সংখ্যা
![]() |
Image Credits: Pixabay |
সারসংক্ষেপ : এ হাদীস থেকে প্রমাণিত হয় যে, রসূল স. বিতির ব্যতীত কখনও ৪ রাকাত, কখনও ৬ রাকাত আবার কখনও ৮ রাকাত তাহাজ্জুদ পড়তেন।
অনুবাদ : হযরত আয়েশা রা.-এর নিকট রসূলুল্লাহ স.-এর রাতের নামায সম্পর্কে জিজ্ঞেস করা হলে তিনি বলেন, রসূল স. রমাযান এবং রমযানের বাইরে ১১ রাকাতের উপরে বাড়াতেন না। প্রথমে চার রাকাত পড়তেন। তা কত দীর্ঘ এবং কত সুন্দর ছিলো সে সম্পর্কে আমাকে জিজ্ঞেস করো না। পুনরায় চার রাকাত পড়তেন। তা কত দীর্ঘ এবং কত সুন্দর ছিলো সে সম্পর্কে আমাকে জিজ্ঞেস করো না। এরপরে তিন রাকাত পড়তেন। (বুখারী-১০৮১) শাব্দিক কিছু তারতম্যসহ এ হাদীসটি ছেহাহ ছিত্তার সব কিতাবে বর্ণিত হয়েছে। (জামেউল উসূল-৪১৯৮)
সারসংক্ষেপ : এ হাদীস থেকে প্রমাণিত হয় যে, রসূল স. ৮ রাকাত তাহাজ্জুদ পড়তেন। আর তিন রাকাত বিতির পড়তেন।
ফায়দা : এ হাদীসে হযরত আয়েশা রা. রসূল স.-এর রাতের নামাযের রাকাত সংখ্যার ব্যাপরে ১১ রাকাতের উপরে না পড়বার যে মন্তব্য করেছেন তা, তাঁর জানা অনুযায়ী করেছেন। অন্যথায় খোদ আয়েশা রা. থেকে মুসলিম শরীফে ফজরের ছুন্নাত ব্যতীত ১৩ রাকাত বর্ণিত হয়েছে। আর হযরত ইবনে আব্বাস এবং হযরত যায়েদ বিন খালেদ যুহানী রা. থেকে বিতির পড়ার পূর্বেই ১২ রাকাত পড়ার বর্ণনা রয়েছে। এর সাথে তিন রাকাত বিতির যুক্ত হলে ১৫ রাকাত পড়ার প্রমাণ বুখারী-মুসলিমের হাদীসেই মিলবে। আর এটা অতি স্বাভাবিক কথা যে, একত্রে রসূল স.-এর নয়জন স্ত্রী ছিলেন এবং তিনি পালাক্রমে প্রতি স্ত্রীর ঘরে রাত্র যাপন করতেন। সুতরাং হযরত আয়েশা রা. বলতে পারেন তাঁর ঘরে আদায়কৃত রসূল স.-এর রাতের নামাযের রাকাত সংখ্যা। অন্যান্য স্ত্রীদের ঘরে রসূল স. কি আমল করতেন এটা তাঁর দেখার কথা নয়। সংগত কারণে হযরত আয়েশা রা.-এর এ মন্তব্য তাঁর নিজ ঘরে রসূল স.-এর আদায়কৃত রাতের নামাযের রাকাত সংখ্যার ব্যাপারে প্রযোজ্য। অন্যান্য স্ত্রীদের ঘরে হযরতের
আমলের চিত্র ভিন্নও ছিলো।
তাহাজ্জুদ পড়ার নিয়তে ঘুমালে তাহাজ্জুদের সওয়াব পাওয়া যাবে
হযরত আবুদ্ দারদা রা. বলেন, রসূলুল্লাহ স. ইরশাদ করেন: যে ব্যক্তি রাতে উঠে তাহাজ্জুদ আদায় করার নিয়তে বিছনায় যায়; অতঃপর ঘুমের চাহিদা প্রবল হওয়ার কারণে সে ভোর পর্যন্ত উঠতে না পারে, তাহলে তার জন্য তার নিয়ত অনুযায়ী সওয়াব লেখা হবে। আর ঘুম আল্লাহ তাআলার পক্ষ থেকে সদকা হয়ে যাবে। (নাসাঈ: ১৭৯০, ইবনে মাযা-১৩৪৪)
হাদীসটির স্তর : সহীহ। এ হাদীসের রাবীগণ সকলেই বুখারী/মুসলিমের রাবী। ইবনে মাযা শরীফের তাহকীকে শায়খ শুআইব আরনাউত বলেন, হাদীসটি হাসান। (ইবনে মাযা-১৩৪৪)
সারসংক্ষেপ : এ হাদীস থেকে প্রমাণিত হয় যে, কোন ব্যক্তি খালেছ মনে তাহাজ্জুদ পড়ার নিয়ত করে ঘুমানোর পরে যদি ঘুম না ভাঙ্গে; আর এ কারণে সে তাহাজ্জুদে উঠতে না পারে। তবুও খালেছ নিয়তের কারণে সে তাহাজ্জুদের নেকী পেয়ে যাবে।