মেসওয়াকের ফযিলত ও গুরুত্ব-মেসওয়াকের সুন্নাত ও মুস্তাহাব সময়।

মেসওয়াকের ফযিলত ও গুরুত্ব সম্পর্কে হাদীসে অনেক বর্ণনা রয়েছে। রাসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলেন, আমার উম্মতের জন্য যদি কঠিন হওয়ার ভয় না থাকতো তাহলে তাদের উপর আমি প্রত্যেক নামাযের জন্য মেসওয়াক ওয়াজিব করে দিতাম।            (বুখারী, মুসলিম)

মেসওয়াক

” মেসওয়াক করা মুখের পবিত্রতার উপায় এবং আল্লাহ তায়ালার সন্তুষ্টির কারণ”। রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম আরো বলেন, জিব্রাঈল (আ) যখনই আমার কাছে এসেছেন, তখনই মেসওয়াক করার কথা বলেছেন। এই বারংবার তাগিদের কারণে আশংকা হয় যে, আমি আমার মুখের অগ্রবাগ মেসওয়াক করতে করতে ক্ষয় না করে ফলি।                 (মুসনাদে আহমদ)।

হযরত আয়েশা (রা) বলেন, রাসূলে করীম সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম এ অভ্যাস ছিল, দিনে অথবা রাত্রে যখনই তিনি ঘুমাতেন, ঘুম থেকে উঠার পর অযু করার পূর্বে মেসওয়াক অবশ্যই করতেন।                    (মুসনাদে আহমদ)

মেসওয়াকের সুন্নাত

১। মেসওয়াক অর্ধ হাতের বেশী লম্বা এবং আঙ্গুলের বেশী মোটা না হওয়া। ২। কমপক্ষে তিনবার মেসওয়াক করা এবং প্রত্যেক বার পানিতে ভিজানো, ৩। ডান হাতে মেসওয়াক করা এবং ৪। ডান দিক থেকে মেসওয়াক শুরু করা ৫। আঙ্গুল দ্বারা মেসওয়াক করার নিয়ম হলো, মুখের ডান দিক বৃদ্ধাঙ্গুলি দিয়ে পরিস্কার করবে এবং বাম দিক তর্জনী দ্বারা পরিষ্কার করবে। ৬। দাঁতের প্রস্থ ও জিহবার দৈর্ঘ্যে মেসওয়াক করা উচচিত। দাঁতের বাইরে ও ভিতরে মেসওয়াক দ্বারা সাফ করা প্রয়োজন।

মেসওয়াক না থাকলে আঙ্গুল বা মোটা কাপড় দিয়ে মেসওয়াক করলেও মেসওয়াকের সুন্নাত আদায় হয়ে যাবে। টুথব্রাশ বা টুথপেষ্ট দিয়ে দাঁত মাজলে দাঁত পরিষ্কার হবে বটে এবং এটা নাজায়েযও নয়। তবে সুন্নাত আদায় হবে না।

মেসওয়াকের সুন্নাত ও মুস্তাহাব সময়

১। খুমানোর পূর্বে এবং ঘুম থেকে উঠার পর, ২। অযু করার সময়, ৩। কোরআন তেলাওয়াতের আগে, ৪। হাদীস পড়া ও পড়ানোর পূর্বে, ৫। মুখে দুর্গন্ধ হলে অথবা দাঁতের রং বদলে গেলে, ৬। নামাযে দাঁড়ানোর সময়, (যদি অযু ও নামায এ দু’য়ের মাঝে দূরত্ব একটু বেশী হয়।) ৭। আল্লাহ পাকের যিকির করার পূর্বে, ৮। কা’বা ঘরে বা হা’তীমে প্রবেশ করার সময়, ৯। নিজ গৃহে প্রবেশ করার পর, ১০। সহবাসের আগে, ১১। কোন ভাল মজলিসে যাওয়ার পূর্বে, ১২। ক্ষুধা-পিপাসা লাগলে, ১৩। সেহরীর সময়, ১৪। খাদ্য গ্রহণের আগে, ১৫। সফরে বের হওয়ার আগে, ১৬। সফর থেকে ফেরার পর, ১৭। মৃতুর আলামত প্রকাশ পাওয়ার আগে, (কেননা ওয়াফাতের সময় রাসূলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লামের সর্বশেষ কাজ ছিল মেসওয়াক করা।)

Add a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *