মাসবুকের ছুটে যাওয়া নামায আদায়ের পদ্ধতি
হযরত আবু হুরায়রা রা. বলেন: রসূলুল্লাহ স. ইরশাদ করেন: যখন তোমরা ইকামাত শুনতে পাও তখন ভাবগাম্ভীর্যের সাথে ও শান্তভাবে নামাযের দিকে অগ্রসর হও। তাড়াহুড়ো করো না। অতঃপর যা পাও তা পড়; আর যা ছুটে যায় তা পূর্ণ কর। (বুখারী: ৬০৮) শাব্দিক কিছু তারতম্যসহ এ হাদীসটি মুসলিম, তিরমিযী, আবু দাউদ এবং নাসাঈ শরীফেও বর্ণিত হয়েছে। (জামেউল উসূল-৩৯০৩)
![]() |
Image Credits: Unsplash |
হযরত আবু হুরায়রা রা. থেকে সহীহ সনদে বর্ণিত আছে যে, রসূলুল্লাহ স. ইরশাদ করেন, তোমরা ধীরস্থিরতার সাথে নামাযে উপস্থিত হও। অতঃপর
( ইমামের সাথে) যা পাও তা আদায় কর। আর যা ছুটে যায় তা (ইমামের সালামের পর) আদায় করে নাও। (আবু দাউদ: ৫৭৩)
সারসংক্ষেপ : উল্লিখিত হাদীসদুটির মধ্যে প্রথম হাদীসে বলা হয়েছে: ছুটে যাওয়া নামায পূর্ণ করতে। আর পূর্ণ করা বলা হয় এমন নামাযকে যা এখনও আদায় করা হয়নি। এ থেকে বুঝা যায় যে, ইমামের সঙ্গে প্রাপ্ত নামায হলো শুরু নামায; আর যা ছুটে গেছে সেটা হলো শেষ নামায। আবার দ্বিতীয় হাদীসে এর বিপরীত ছুটে যাওয়া নামায কাযা (আদায়) করতে বলা হয়েছে। আর কাযা বলা হয় এমন নামাযকে যা গত হয়ে গেছে। এ থেকে বুঝা যায় যে, ইমামের সঙ্গে প্রাপ্ত নামায হলো শেষ নামায আর যা ছুটে গেছে সেটা হলো শুরু নামায। উভয় হাদীস সহীহ হওয়ায় আমলের ক্ষেত্রে এভাবে সমন্বয় করা হয়েছে যে, ইমামের সঙ্গে প্রাপ্ত নামায বৈঠকের দিক দিয়ে শুরু নামায; আর কুরআন পাঠের দিক দিয়ে শেষ নামায। সুতরাং ছুটে যাওয়া নামায আদায় করার সময় কুরআন পাঠ সে নিয়মে করতে হবে, নতুন নামায শুরু করলে যে নিয়মে পাঠ করতে হয়। আর বৈঠক করতে হবে এ নিয়মে যে, ইমামের সঙ্গে প্রাপ্ত রাকাতগুলো আমার পড়া হয়ে গেছে; এর সাথে এখন যুক্ত হবে আমার নতুন আদায়কৃত নামায।
এ মাসআলাটিকে আমরা একটি উদাহরণের মাধ্যমে বুঝতে পারি। মনে করি, চার রাকাত নামাযের মধ্যে আমি এক রাকাত পেয়েছি। এবার দাঁড়িয়ে প্রথম দুই রাকাতে ফাতিহার সাথে ছুরা মিলাবো; যেমন শুরু নামাযে মিলানো হয়। আর
বৈঠকের ক্ষেত্রে এক রাকাত পড়ে বসব; কেননা, ইমামের সাথে প্রাপ্ত এক রাকাত নামাযসহ এটা আমার দ্বিতীয় রাকাত।
উল্লেখ্য, কোন কারণে ইমামের সিজদায়ে সাহুর প্রয়োজন দেখা দিলে ইমাম ও তাঁর সঙ্গে যে মুক্তাদীগণ পূর্ন নামায পেয়েছে তারা সালাম ফিরিয়ে সিজদায়ে সাহু করবেন। কেননা তাদের নামায শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু মাসবুক ব্যক্তি সালাম না ফিরিয়ে ইমামের সাথে সিজদায়ে সাহুতে অংশ নিবে। কেননা সালাম ফিরাতে হয় নামাযের শেষে। (তিরমিযী: ৩) আর তার নামায এখনও শেষ হয়নি।