বাংলা ভাষাই ব্লগিং করতে চাচ্ছেন? তাহলে এই আর্টিকেলটি আপনার জন্য উপযুক্ত।

এখানে আপনি জানতে পারবেন –
কেন বাংলা ভাষাই ব্লগিং শুরু করবেন?কিভাবে ওয়েবসাইটের প্লানিং তৈরি করবেন?

ওয়েবসাইটের জন্য কোন প্লাটফর্ম বেছে নিবেন?
ওয়েবসাইটের‍ কনটেন্ট প্লানিং কিভাবে করবেন?
বাংলায় কিভাবে কিওয়ার্ড রির্সাচ করবেন?
তাহলে শুরু করা যাক,
বাংলা ভাষায়_ব্লগিং
বাংলা ভাষায় ব্লগিং 

কেন বাংলা ভাষাই ব্লগিং শুরু করবেন?

আমরা ইতিমধ্যে জানি, বর্তমানে সারাবিশ্বে লাখ লাখ মানুষ কোন নির্দিষ্ট তথ্য খোঁজার জন্য সার্চ ইঞ্জিন গুলোতে সার্চ করছে প্রতিনিয়ত। যদি একটু ভিতরে চিন্তা করি তাহলে দেখতে পারবো, সেই সব তথ্য গুলো প্রধানত দিচ্ছে ওয়েবমাস্টাররা। ওয়েবমাস্টার কারা? যার একটা ওয়েবসাইট আছে, সেই ওয়েবমাস্টার। সার্চ ইঞ্জিন গুলোতে ইংলিশ কনটেন্ট সবচেয়ে বেশি আছে বর্তমানে এবং ইংলিশ কন্টেন্টের ইনকাম ও বেশি।
তাই আপনি যদি ইংলিশে এক্সপার্ট হয়ে থাকেন, অর্থাৎ ভালোভাবে মানসম্মতভাবে ইংলিশ পড়তে ও লিখতে পারেন, তাহলে আপনার জন্য ইংলিশে ব্লগিং করাই উত্তম। ভালো ইনকাম করতে পারবেন পাশাপাশি বড় প্লানিং ও করতে পারবেন। চাইলে বাংলা ভাষায় দিয়ে শুরু করতে পারবেন। সম্পরন ইচ্ছা আপনার উপর নির্ভর করবে।
অধিকাংশ মানুষ মনে করে বাংলা কন্টেন্ট দিয়ে ভালো কিছু করা যাবে না, এইটা একদমই ভুল কথা। হাজার হাজার সাইট বাংলায় তৈরি হচ্ছে ইনকাম করছে, তবে গুগল এডসেন্স দিয়ে ইনকাম তুলনামূলক একটু কম হয়ে থাকে। কিন্ত আপনারা হইতো জানেন না, এক সাইট থেকে কত ভাবে ইনকাম করা যায়।
আপনি যদি বাংলা ভাষাই সঠিকভাবে ব্লগিং করতে পারেন, ভালো মানের একটা ওয়েবসাইট তৈরি করতে পারেন এবং শেষে প্রচুর ট্রাফিক নিয়ে আসতে পারেন, তাহলে বাংলা সাইট দিয়েও আপনি যতেষ্ট ইনকাম করতে পারবেন।
ওয়েবসাইট থেকে আয় করার জন্য মূলত প্রয়োজন ট্রাফিক, হ্যাঁ যতো ট্রাফিক নিয়ে আসতে পারবেন তত আয় করতে পারবেন। আর এইজন্য আপনাকে ডিজিটাল মার্কেটিং এর স্ট্রেটেজি ধাপে ধাপে সম্পর্ন করতে হবে।
আপনারা জানেন এখন গুগল আডসেন্স বাংলা কনটেন্টে সমর্থন করে। এছাড়া আপনার সাইটে যদি প্রচুর ট্রাফিক থাকে, তাহলে আপনার ওয়েবসাইটের নির্দিষ্ট কিছু জাইগা বিক্রি করেও আরনিং করতে পারবেন। তাছাড়া টার্গেটেড ট্রাফিক দ্বারা নিজের কোন প্রোডাক্ট বিক্রিও করতে পারবেন। আর দেশি স্পন্সরতো আছেই। বাংলাভাষাই যেকোনো কিছু লেখা সহজ হওয়াই, ব্লগিং করে সাফল্য পাওয়া যাই, মাঝপথে বিরক্তি লাগে না। তাছাড়া বাংলাই তথ্য খোঁজার সংখ্যাও কিন্ত কম নই। এবং দিন দিন তো বাড়ছেই। এই কারণ গুলোর জন্য আপনি বাংলা ভাষাই ব্লগিং শুরু করতে পারেন। তবে মনে রাখবেন একটা কথা –
যেকোনো সেক্টরে অনেক কষ্টের ফলেই কিন্ত ভালো কিছু করা সম্ভব হয়।

কিভাবে ওয়েবসাইটের প্লানিং তৈরি করবেন?

এখানে ওয়েবসাইটের প্লানিং বলতে আমি বুঝাতে চেয়েছি, কি নিস নিয়ে সাইট শুরু করবেন। ম্যাল্টি নিস নিয়ে শুরু করবেন নাকি সিংগেল নিস নিয়ে শুরু করবেন এবং কি ধরনের নিস নিয়ে কাজ শুরু করবেন। নিস নির্বাচন করার সময় প্রথম কথা হচ্ছে – আপনার কোন বিষয়টার প্রতি আগ্রহ আছে বেশি। কি নিয়ে লিখা লিখি করতে আপনার ভালো লাগে। সেইটা নিয়েই শুরু করুন, তাহলে অনেক কনটেন্ট দিতে পারবেন, ভালো ধারণা তৈরি করতে পারবেন সহজেই। এবং আগ্রহ থাকার ফলে শেষ পর্যন্ত লেগে থাকতে পারবেন।
একটা প্রধান কথা সবসময় মাথাই রাখা উচিত, সেটা হচ্ছে কোন কিছু লেখার সময় সৎ এবং নির্ভুল তথ্য দিতে হবে, কোন ব্যক্তি বা প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে ভুল এবং ব্রিভান্তিকর তথ্য দেওয়া যাবে না। অর্থাৎ, তর্ক বিতর্কের বা মিথ্যা ব্রিভান্তিকর কোন আর্টিকেল দেওয়া যাবে না। অথেনটিক তথ্য না দেওয়ার ফলে সমস্যায় পড়তে পারেন, তাছাড়া ট্রাফিক তো হারাবেনই।
এইভাবেই একটা কনটেন্ট প্লানিং তৈরি করবেন আপনার ওয়েবসাইটের জন্য। নিচে কন্টেন্ট প্লানিং এর আরও বিস্তারিত আছে। এখন বাংলাদেশ থেকে ডোমেইন এবং হোস্টিং নিয়ে খুব সহজেই শুরু করে দিতে পারবেন। ডোমেইন কিনার বা বাছাই করার সময় সহজ অ্যান্ড শর্ট নাম খুঁজবেন অর্থাৎ এমন নাম নির্বাচন করবেন যেন সবাই সহজেই মনে রাখতে পারে।

ওয়েবসাইটের জন্য কোন প্লাটফর্ম বেছে নিবেন?

এইটা নিয়ে বিস্তারিত বলতে চাচ্ছি না। আমার কাছে ওয়ার্ডপ্রেসই হচ্ছে উত্তম সব কিছুর থেকে। লাখ লাখ ওয়েবসাইট তরি করা হচ্ছে ওয়ার্ডপ্রেস দ্বারা করা। এখানে কোনো কোডিং জ্ঞান লাগবে না, তাছাড়া ওয়ার্ডপ্রেস এসইও ফ্রেন্ডলি। যেকোনো পোস্টকে এসইও ফ্রেন্ডলি করতে পারবেন খুব সহজেই। আরও অনেক অনেক সুবিধা রয়েছে এখানে। তাই কেনই বা আপনি ওয়ার্ডপ্রেস দ্বারা ওয়েবসাইট তৈরি করবেন না। আমি মনে করি এইটাই আপনার উপযুক্ত জাইগা। তবে আপনার ইচ্ছা ও জ্ঞান অনুযায়ী পারলে অন্য কিছু দিয়েও শুরু করতে পারবেন।

ওয়েবসাইটের‍ কনটেন্ট প্লানিং কিভাবে করবেন?

আমার কথা বলছি – প্রথমে আমি নিসটা ১০০% নির্বাচন করেই, রিসার্চ করা শুরু করে দেই গুগলে, ইউটিউবে এবং ফেসবুকে। কম্পিটিটর গুলো খুঁজে বের করি একটা একটা করে। কম্পিটিটর গুলো এনালাইছিস করি সঠিক ভাবে। এই নিস নিয়ে কে কি লিখছে, কি মন্তব্য করছে। এইটার কি আসলেই চাহিদা আছে, কেমন চাহিদা আছে ইত্যাদি ইত্যাদি। কম্পিটিটর সাইটের কনটেন্ট কেমন আছে। তাদের প্লান কেমন সেখান থেকে একটা বড় ধারণা নিয়ে থাকি, কিভাবে তাদের চেয়ে ভাল মানের কনটেন্ট দেওয়া যাই। কিভাবে কনটেন্ট গুলো সাঁজালে সবার জন্য সুবিধা হবে, খুব সহজেই পড়তে পারবে ইত্যাদি বেপার গুলো ডেভেলপ করে থাকি, কিওয়ার্ড রির্সাচ করে যথেষ্ট একটা ধারণা অর্জন করি। কিন্ত সাবধান কনটেন্ট কপি করা যাবে না। গুগল এখন খুব স্মার্ট, এখন গুগল পাণ্ডা কনটেন্টকে খুব নিখুঁত ভাবে এনালাইসিস করে কপি পেলে পেনাল্টি ও দিয়ে দিতে পারে ।
এখন আমি কত বড় সাইট তৈরি করবো, আমার কাছে কতটুক সময় আছে, দিনে কতটা সময় দিতে পারবো, কি কি নিয়ে লেখবো, তার একটা প্লানিং করে ফেলি অ্যান্ড ভাল ভাবে কিওয়ার্ড রিসার্চ করে সেগুলো প্রাথমিকভাবে নির্বাচন করে স্টেপ বাই স্টেপ সাজিয়ে ফেলি একটা ফাইলে, কি কি কাট্যাগরি হবে, কতটা কনটেন্ট দিবো ১০০+, ২০০+ নাকি ১০০০+। তারপর সঠিক এবং যুক্তিসঙ্গত ভাল মানের কনটেন্ট লেখা শুরু করি। এসও ফ্রেন্ডলি আর্টিকেল লিখার চেষ্টা করি।
বিঃ দ্রঃ

বাংলায় কিভাবে কিওয়ার্ড রির্সাচ করবেন?

হ্যাঁ, এই বিষয়টাই সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। আসলে বাংলাই কিওয়ার্ড এর সার্চ ভলিউম খুবি কম হয়ে থাকে, আর এইটা স্বাভাবিক। ইংলিশে তো অনেক টুলস আছে, কম বেশি আপনারা জানেন। কিন্ত বাংলায় কিভাবে কিওয়ার্ড রির্সাচ করবেন, রির্সাচ করার সময় কোন কোন বিষয় গুলো অনুসরণ করতে হবে? আমি যতটুকু জানি বলার চেষ্টা করছি –
২ টা টুলস আছে আমার জানা –
০১। keyword planner
০২। Semscoop.com
০১। keyword planner এ লগইন করার পর, লোকেশান অ্যান্ড ল্যাংগুয়েজ বাংলা করে দিবেন, সেখানে বাংলাই আপনার ধারণা করা কীওয়ার্ড দ্বারা সার্চ দিবেন, তারপর দেখতে পারবেন মাসে কতবার সার্চ হচ্ছে, কম্পিটিটর কেমন।
০২। Semscoop.com থেকেও বাংলা কীওয়ার্ড এর সার্চ ভলিউম জানতে পারবেন। ঠিক লোকেশান টা বাংলাদেশ করে দিবেন, তাহলেই পেয়ে জাবেন অনেক আইডিয়া।
০৩। তাছাড়া আপনি গুগল রিলেটেড কীওয়ার্ড গুলো অবশ্যই সিলেক্ট করতে পারেন। কারণ গুগলে যেই কী ওয়ার্ড দিয়ে সার্চ হয়ে থাকে, সেগুলোই কিন্ত দেখাই। এই ৩ টা বিষয় অনুসরণ করে যদি কি ওয়ার্ড রির্সাচ করতে পারনে, তাহলে ভাল ফলাফল পাওয়া যাবে।
আর একটা কৌশল বলি – সেটা হচ্ছে বাংলাতেই আর্টিকেল লিখেবন, টাইটেল সব বাংলায় দিবেন কিন্ত  উআরএল টা ইংলিশে দিতে পারেন। এর ফলে ভালো ট্রাফিক পাওয়ার সম্ভবনা থাকবে। রাঙ্কে আসার সম্ভবনা থাকে খুব বেশি। এমনকি ডোমেইন অথোরিটি বেশি হয়ে গেলে ভালো ভালো সাইট কেও পিছনে ফেলে দিবে।
এখানে আমি কিছু ইনফো দেওয়ার চেষ্টা করেছি, আমার যতটুকু জানা আছে তার মধ্যে থেকে। ভুল হলে ধরিয়ে দিবেন, খারাপ মন্তব্য গ্রহন করা হবে অবশ্যই। আর যদি অনুপ্রেরুনা দেন তাহলে আরও ভালো কিছু লিখার চেষ্টা করবো আপনাদের জন্য (যারা জানতে চাচ্ছেন)। 😍
ভালো লাগলে, শেয়ার করতে ভুলবেন না।
আজকে এই পর্যন্তই
Credit: সাহাজুল ইসলাম, ডিজিটাল মার্কেটিং বিশেষজ্ঞ।

Add a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *