ফিদইয়া-ফিতরা কার উপর ওয়াজিব, ফিতরা কাকে দেওয়া জায়েয।
যদি কোন ব্যক্তি এমন বৃদ্ধ হয় যে, রোযা রাখতে অক্ষম বা এমন রোগী হয় যে, ভাল হওয়ার আর কোনও সম্ভাবনা নেই, তবে উক্ত ব্যক্তি তার প্রত্যেক রোযার পরিবর্তে একজন মিসকিনকে দু’বেলা তৃপ্তি সহকারে খাওয়াতে হবে। অথবা প্রত্যেক রোযার পরিবর্তে একজন মিসকীনকে এক সের সাড়ে তের ছটাক আটা বা গম বা ময়দা ইত্যাদি বা তার মূল্য প্রদান করতে হবে। এটাই শরীয়তের বিধান এবং এটাকেই ফিদইয়া বলে।
![]() |
Image Credits: Pixabay |
কিন্তু উক্ত ব্যক্তি যদি পরে সুস্থ হয় তা হলে যে সমস্ত রোযার ফিদইয়া দেয়া হয়েছে সেগুলো পুনরায় ক্বাযা করতে হবে। ফিদইয়ার জন্য আলাদা ছওয়াব পাবে। আর ফিদইয়া এক সের সাড়ে তের ছটাকের স্থলে পুরো দু’সের দেয়াই উত্তম। কারণ, বেশী হলে কোন অসুবিধে নেই বরং ছওয়াব বেশী হবে। কিন্তু কম হলে ফিদইয়া আদায় হবে না। একসাথে অনেকগুলো রোযার ফিদইয়া দিলে মাত্র ১টি রোযার ফিদইয়া আদায় হবে। তাই প্রতিদিনই দেয়া উচিৎ।
তদ্রুপ ঈদের দিনও ফিতরা এক সের সাড়ে তের ছটাক দিতে হবে, এই ক্ষেত্রেও দুসের দেয়া উত্তম। তবে ঈদের নামাযের পূর্বেই ফিতরা আদায় করা উচিত। যার উপর ফিতরা ওয়াজিব হয়েছে সে যদি ঈদের দিন তা আদায় না করে তবে তার ফিতরা মাফ হবে না।
ফিতরা কার উপর ওয়াজিব
ঈদের দিনের ছোবহে ছাদেকের সময় কোন ব্যক্তি জীবিকা নির্বাহের অত্যাবশ্যকীয় উপকরণসমূহ ব্যতীত সাড়ে সাত তোলা স্বর্ণ বা সাড়ে বায়ান্ন
তোলা রূপা অথবা সমমূল্যের অন্য কোন মাল বা টাকা পয়সার মালিক থাকলেই তার উপর এবং তার পরিবারস্থ লোকের উপর ফিতরা ওয়াজিব হবে। জীবিকা নির্বাহের অত্যাবশ্যকীয় উপকরণ, যেমন- পরিধানের বস্ত্র, শয়নের জন্য গৃহ ও
আহারের জন্য খাদ্য-দ্রব্য ইত্যাদি। তবে যাকাতের ন্যায় এ অতিরিক্ত মালের উপর এক বৎসর অতিবাহিত হওয়া লাগবে না। আর ব্যবসায়ের মাল হউক বা অন্য কোন প্রকার মাল হউক কোন অসুবিধে নেই। শুধু ঈদের দিন ঐ পরিমাণ মালের বা টাকার মালিক থাকলেই ফিতরা ওয়াজিব হবে।
ফিতরা কাকে দেওয়া জায়েয
প্রত্যেক গরীব মিসকীনকেই ফিতরা দেওয়া জায়েয। তবে নিজের আত্মীয়-স্বজন এবং পাড়া-প্রতিবেশীদের মধ্যে গরীব মিসকীন থাকলে তাদেরকেই প্রথমে দিতে হবে। ফিতরা দানকারী কখনও তার মা-বাপ, দাদা-দাদী, নানা-নানী বা নিজের ছেলে-মেয়েকে ফিতরা দিতে পারবে না।
মাদ্রাসার গরীব ছাত্রদিগকেও তাদের পড়া-লেখার উন্নতির জন্য ফেতরা দেওয়া যায়েজ আছে।