গাফলতি থেকে সচেতন ব্যক্তির নিদর্শন চারটি

সচেতন_ব্যক্তির_নিদর্শন
যে ব্যক্তি গাফলতির পর্দা ছিড়িয়া সচেতন হইয়া উঠে তাহার নিদর্শন চারটি-
(১) সে ইহকালীন ব্যাপারে ধৈর্য ধারণ করে। তাহা সম্পাদন করিতে বিলম্ব করিতে থাকে।
(২) পরকালীন ব্যাপারে অত্যন্ত আগ্রহী হয় এবং পরকালীন কাজগুলি আগে আগে করিয়া ফেলে।
(৩) দ্বীনের ব্যাপারে ইলমের আলোকে পরিশ্রমের সাথে কার্যাবলীর আঞ্জাম দেয়।
(৪) মাখলুকের সাথে তাহার আচরণ উপদেশ মূলক ও সৌজন্য মূলক হয়।

সর্বোৎকৃষ্ট মানুষ

জনৈক ব্যক্তি বলিয়াছেনঃ যাহার মধ্যে পাঁচটি গুণের সমাবেশ থাকে- সে সর্বোৎকৃষ্ট মানুষ।
(১) সে ব্যক্তি আল্লাহ তাআলার ইবাদতকারী হয়।
(২) সমস্ত সৃষ্টির মঙ্গলকামী ও কল্যাণকামী হয়।
(৩) মানুষ তাহার অনিষ্টতা হইতে নিরাপদে থাকে।
(৪) অন্যের ধন সম্পদের প্রতি আকাংক্ষী হয় না।
(৫) সর্বদাই মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত থাকে।

মনঃপূত তিনটি গুণ

হযরত আবু দারদা রাদিআল্লাহু আনহু বলেন-
(১) আমি দারিদ্রতাকে ভালবাসি। যাহাতে আল্লাহর দরবারে বিনয়ী হইয়া থাকিতে পারি ।
(২) অসুস্থতা ভালবাসি, যাহাতে উহার দ্বারা আমার গুনাহ মাফ হইয়া যায়।
(৩) মৃত্যুকে ভালবাসি, যাহাতে আল্লাহর দীদার লাভ করিতে পারি।

উত্তম ও সবচেয়ে বুদ্ধিমান মানুষ

ইবনে মাসউদ রাদিআল্লাহু আনহু বর্ণনা করিয়াছেন- কোন ব্যক্তি রাসূলুল্লাহ সাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম কে জিজ্ঞাসা করিলেন- মানুষের মধ্যে কোন্ ব্যক্তি উত্তম? রাসুলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উত্তর দিলেন – যাহার চরিত্র উত্তম সেই উত্তম ব্যক্তি। আবার জিজ্ঞাসা করিল- কোন্ ব্যক্তি সবচেয়ে বুদ্ধিমান? রসূলুল্লাহ সল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়াসাল্লাম উত্তর দিলেন- যে মৃত্যুকে স্মরণ করে এবং উহার জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করে সেই সবচেয়ে বুদ্ধিমান।

সুসংবাদের পাঁচ প্রকার

নিশ্চয়- যাহারা বলে আমাদের রব আল্লাহ। অতঃপর উহার উপর অটল থাকে। (তখন) তাহাদের প্রতি ফিরিশতা অবতীর্ণ হয়। (আর বলিতে থাকে) তোমরা ভয় করিও না এবং চিন্তিত হইও না। এবং তোমাদের কাছে প্রতিশ্রুত বেহেশতের সুসংবাদ গ্রহণ কর।

এই সুসংবাদের পর্যায় পাঁচটি

(১) সাধারণ মুমিনের জন্য- তোমরা সর্বদাই আযাব ভোগ করিবে, এই ভয় করিও না। একদিন তোমাদেরকে আযাব থেকে অবশ্যই মুক্তি দেওয়া হইবে। আম্বীয়া (আঃ) এবং নেককার গণ তোমাদের সুপারিশ করিবেন।
(২) মুসলমানদের জন্য- তোমরা স্বীয় আমল সমূহ আল্লাহর দরবারে অগ্রাহ্য হওয়ার আশংকা করিও না। কেননা তোমাদের আমল সমূহ গ্রহণযোগ্য, আর সওয়াব থেকে বঞ্চিত হওয়ার ধারণা করিও না। বরং তোমাদেরকে দ্বিগুণ সওয়াব
দেওয়া হইবে।
(৩) তওবাকারীদের সম্বন্ধে- ঘোষনা করা হয় যে, স্বীয় পাপ সম্পর্কে ভয় করিওনা। উহা তো ক্ষমা করিয়া দেওয়া হইয়াছে এবং তওবা করার পর সওয়াব থেকে বঞ্চিত হওয়ার ভয় করিও না।
(৪) ধর্মনিষ্ঠ ব্যক্তিদের জন্য- মৃত্যুর পর পুনরুত্থান এবং হিসাব-নিকাশ সম্পর্কে ভীত হইওনা বরং হিসাব নিকাশ ছাড়াই বেহেশত লাভের সুসংবাদ গ্রহণ কর।
(৫) আলেমদের জন্য- ঐ সকল আলেম যাহারা মানুষকে কল্যাণ এবং নেক কাজ শিক্ষা দান করেন এবং স্বীয় ইলেম মোতাবেক আমল করেন। তাহাদিগকে বলা হইবে তোমরা কিয়ামতের ভয়াবহ পরিস্থিতিকে ভয় করিও না এবং বিন্দুমাত্র চিন্তিত হইওনা। তোমাদেরকে তোমাদের আমলের প্রতিদান দেওয়া হইবে। অতএব তোমরা এবং তোমাদের অনুসারীদের জন্য বেহেশতের সুসংবাদ গ্রহণ কর।

Add a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *