করোনা ভাইরাস কি ? করোনা ভাইরাসের লক্ষণ ও প্রতিকারের উপায়। Coronavirus

করোনা ভাইরাস 

করোনা ভাইরাস বর্তমানে নতুন আতঙ্কের নাম। করোনা ভাইরাসের একটি প্রজাতির সংক্রামণ দেখা দেয় ২০১৯ সালের ৩১ ডিসেম্বরে চীনের উহান  (Wuhan) শহরে। চীন থেকে এই ভাইরাসের উৎপত্তি। যে হাড়ে করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত ও মৃতের সংখ্যা বাড়ছে তা সামলাতে করা চ্যালেঞ্জের মুখে পড়েছে চীনের স্বাস্থ্যমন্ত্রক। চীনের জাতীয় স্বাস্থ্য কমিশন স্বীকার করেছে, এই ভাইরাস সম্পর্কে এখনো বেশি কিছু জানা যায়নি। তবে চিন্তার বিষয় হলো চীনের সীমানা পেরিয়ে করোনাভাইরাসএখন ইতালি, ইরান, দক্ষিণ কোরিয়া, যুক্তরাষ্ট্র, জাপান, ফ্রান্স, স্পেন, হংকং, অস্ট্রেলিয়া, ইরাক, থাইল্যান্ড, তাইওয়ান, সান ম্যারিনো, ফিলিপাইন, ভিয়েতনাম, নেপাল, ভুটান এরকম ২০০ শোর উপরে দেশগুলোতে ছরিয়ে পরেছে। এখন চিন্তার বিষয় হচ্ছে বাংলাদেশ ও ভারতে এই প্রাণঘাতী করোনাভাইরাস (Coronavirus)এর আতঙ্ক দিনদিন বেড়েই চলছে।

করোনা_ভাইরাস
করোনা ভাইরাস 


বন্ধুরা আজকের এই আর্টিকেলে আমরা জানব এই প্রাণঘাতী করোনা ভাইরাস কি? এই ভাইরাসের কারণ ও উপসর্গ কি? আর এই ভাইরাসের হাত থেকে বাঁচতে আমাদের কি কি করা উচিত। আর্টিকেল টি শেষ অব্দি পরতে থাকুন তাহলে করোনা ভাইরাস সম্পর্কে একটি পরিষ্কার ধারণা পেয়ে যাবেন ইনশাআল্লাহ। শুধু চীন নয়, করোনা ভাইরাসের আতঙ্কে ভুগছে এশিয়ার প্রায় সকল দেশ। ইতিমধ্যে পশ্চিমবঙ্গ বাংলাদেশের বিশেষ সর্তকতা অবলম্বন করা হয়েছে। তাই বন্ধুরা সুস্থ থাকতে অবশ্যই সতর্ক থাকুন। এখন আমরা করোনা ভাইরাস (Coronavirus) কারণ, লক্ষণ ও প্রতিকার সম্পর্কে জানব।

করোনা ভাইরাস কিঃ

চীনের হুবেই প্রদেশের উহান শহরের সিফুড মার্কেট থেকে এ ভাইরাসের উৎপত্তি। ইতিমধ্যে বিশ্বের অনেকগুলো দেশে এ ভাইরাস ছড়িয়ে পড়েছে। নেপাল ও ভুটানে সংক্রমণ দেখা দেওয়ায় ভারত ও বাংলাদেশের দিনদিন আতঙ্ক বাড়ছে। কারন প্রতিদিন বহু মানুষ নেপাল ও ভুটান থেকে ভারত ও বাংলাদেশে আসেন তবে ভারতের কলকাতা ও দিল্লিতে ইতিমধ্যে কিন্তু সংক্রামিত মানুষের সন্ধান পাওয়া গেছে। আসলে চীনে হারাম পশু ও পাখির গোসত কাল হয়ে দারিয়েছে। চীনে অনলাইনে অর্ডার করলে ঘরে ঘরে পৌঁছে যায় সাপ, ইঁদুর, শিয়াল, কুমির, সজারু, নেকড়ে, ময়ূর ইত্যাদি পশুর গোসত মোট ১১২ ধরনের বন্য প্রাণীর গোসত। মূলত এইসব পশুর গোসত থেকে এই রোগ ছড়িয়েছে। বিশেষজ্ঞদের মতে নতুন সংক্রামক রোগের ৭০% – ৮০% রোগ বন্য প্রাণীর গোসত থেকে ছড়ায়।

করোনা ভাইরাসের লক্ষণঃ

নোবেল করোনাভাইরাস (Coronavirus)বলতে আসলে একই গোত্রে অনেকগুলো ভাইরাস কে বোঝায়। এই ভাইরাস গুলো খুব ছোঁয়াচে এবং ভাইরাসের গতি প্রকৃতি বুঝতে রীতিমতো হিমশিম খাচ্ছেন বিশেষজ্ঞরা। কারণ চেনা উপসর্গের আড়ালে হানা দিচ্ছে এই ভাইরাস মূলত করোনাভাইরাস এর প্রাথমিক লক্ষণ গুলি হল শ্বাসতন্ত্রের সংক্রমণ হাঁচি,কাশি,বমি, গলাব্যথা , ক্লান্তি ও মাঝে মাঝে জ্বর।
তবে বিজ্ঞানীরা বলছেন এই ভাইরাসটি দেহে ঢোকার পর সংক্রমণের লক্ষণ দেখা দিতে প্রায় ১ থেকে ১৫ দিন সময় লাগে। প্রথম লক্ষণ হচ্ছে জ্বর তারপর দেখা দেয় শুকনো কাশি এরপর শ্বাসকষ্ট দেখা দেয়। অশুক আরও বাড়লে কিডনি পুরোপুরি নষ্ট হয়ে যেতে পারে। তবে বয়স্কদের ক্ষেত্রে হতে পারে নিউমোনিয়া বিশেষ করে যাদের হৃদরোগ আছে এবং রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কম এ ভাইরাস তাদের আক্রমণ করে সবচেয়ে বেশি। মুলত করোনা ভাইরাস (Coronavirus) এর ছয় টি গোত্র চিহ্নিত করা হয়েছে যেগুলি মানুষের দেহে সংক্রমণ ঘটাতে পারে সেগুলো হলোঃ 229E, NL63, OC43, HKU1, তবে সবচেয়ে বিপদজনক হল MERS-coV, SARS-coVবিশেষজ্ঞরা বলেছেন হাত চাপা না দিয়ে কাশি বা হাঁচি দিলে খুব দ্রুত ছরায় এ ভাইরাস। আক্রান্তের সাথে হাত মেলালে ও শরীরের সংস্পর্শে কিন্তু সংক্রমণ হতে পারে। যে বস্তু বা জায়গায় এ ভাইরাস ছড়িয়ে থাকে সেখান থেকে হাত দেওয়ার পর নাক মুখ চোখে হাত দিলে সংক্রমণ হতে পারে। এখনও পর্যন্ত এই ভাইরাসের কোনো ভ্যাকসিন তৈরি হয়নি। তাই প্রাথমিক কিছু সতর্কতা মেনে চলতেই হবে যেমনঃ সাবান ও গরম পানি দিয়ে হাত পা ধুতে হবে চোখ নাক মুখ থেকে হাত আঙুল দূরে রাখতে হবে। আক্রান্তের থেকে অবশ্যই দূরত্ব বজায় রাখতে হবে নিজেকে সব সময় পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখতে হবে।


করোনাভাইরাস প্রতিকারের উপায়ঃ

করোনা ভাইরাস (Coronavirus) এ আক্রান্ত হলে কয়েকটি পরামর্শ দিয়েছেন চিকিৎসাবিজ্ঞানীরা।
১. প্রচুর জল খেতে হবে।
২. কঠোর পরিশ্রম এড়িয়ে চলতে হবে।
৩. ঠিকমতো বিশ্রাম নিতে হবে।
৪. ধূমপান বর্জন করতে হবে।
৫. ঘরের বাইরে গেলে অবশ্যই সেফটি যেমন মাস্ক পরতে হবে।
আপনি যদি অসুস্থ হয়ে থাকেন তাহলে মাস্ক পরুন আর নিজে অসুস্থ না হলেও অন্যের শংস্পর্শ এরিয়ে চলতে সেফটি যেমন মাস্ক পরতে হবে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা অনুযায়ী করোনাভাইরাস জুনোটিক অর্থাৎ এই ভাইরাস পশুর দেহ থেকে মানুষের দেহে ছড়িয়ে পড়ে। তবে বর্তমান সময়ে মনে করা হচ্ছে এই ভাইরাস সিফুড ও সাপের মাংস খাওয়ার ফলে ছড়িয়ে পড়েছে। শুধু চিন নয় করোনাভাইরাস (Coronavirus) আতঙ্কে ভুগছে এশিয়ার শবদেশ। ইতিমধ্যে অনেকের মৃত্যু হয়েছে এবং আক্রান্ত হয়েছে হাজার হাজার মানুষ জানা গেছে প্রায় লক্ষের কাছাকাছি। তাহলে বুঝতেই পারছেন বন্ধুরা কি মারাত্মক এ করোনা ভাইরাস। ইতিমধ্যে পশ্চিমবঙ্গ ও বাংলাদেশে বিশেষ সর্তকতা অবলম্বন করা হয়েছে। আর একটি কথা মনে রাখবেন সুস্থ থাকতে হলে আপনাকে সতর্ক থাকতেই হবে।

করোনাভাইরাস থেকে রক্ষার দোয়াঃ

اللَّهمَّ إِنِّي أَعُوُذُ بِكَ مِنَ الْبرَصِ، وَالجُنُونِ، والجُذَامِ، وسّيءِ الأَسْقامِ.
বাংলা উচ্চারণ:
আল্লাহুম্মা ইন্নি আ’য়ুজুবিকা মিনাল বারাছ, ওয়াল জুনুন, ওয়াল জুযাম, ওয়া সায়্যিইল আসক্বাম।
বাংলা অর্থ:
হে আল্লাহ, আমি তোমার নিকট ধবল, কুষ্ঠ এবং উন্মাদনা সহ সব ধরনের কঠিন দূরারোগ্য ব্যাধি থেকে পানাহ চাই। [ সুনান আবু দাউদ ]

করোনা হটলাইন নাম্বারঃ

আপনার নিজের অথবা পরিবারের কারো করোনা ভাইরাসে আক্রান্ত হওয়ার লক্ষন দেখা দিলে” ইনস্টিটিউট অব এপিডেমোলোজি ডিজিজ কন্ট্রোল এন্ড রিসার্চ” আইইডিসিআরে যোগাযোগ করুন নিচের নম্বর গুলোর মাধ্যমে।

IEEDCR HOTLINE

+8801927711785
+8801937000011
+8801927711784
+8801937110011

প্রয়োজনে নিচের নম্বরগুলোতেও যোগাযোগ করতে পারেনঃ

প্রতিরোধের উপায় জানতে

আইইডিসিআর: ১০৬৫৫, ০১৯৪৪৩৩৩২২২

চিকিৎসার জন্য

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর: ৩৩৩
স্বাস্থ্য বাতায়ন: ১৬২৬৩
শেষ কথাঃ বন্ধুরা যদি এই আর্টিকেল টি ভাল লেগে থাকে তাহলে অবশ্যই আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন এবং জানান এই প্রাণঘাতি করোনা ভাইরাস (Coronavirus) সম্পর্কে। কারন আপনার শেয়ারের জন্য বাঁচতে পারে একটি প্রান। আর আপনার মুল্যবান কমেন্ট করে Shamimblog কে জানান যে আপনার এই আর্টিকেল টি কেমন লাগলো। সাবাই ভালো থাকুন সুস্থ থাকুন আল্লাহ হাফেজ।

Add a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *